দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২০২তম দিনে ভাইরাসে সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ২১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
গতকালের চেয়ে আজ ৭ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ২৮ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৯৩ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় ১২ হাজার ৪৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৩৮৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ১৫৭ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১২ হাজার ৯০০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ৫৪০ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১১ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৮৫ শতাংশ কম।
দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৮ লাখ ৮৮ হাজার ১০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৫৬ হাজার ৭৬৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৯৩২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ৬৭ হাজার ২৪ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৭৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১২ হাজার ৫৯৩ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১২ হাজার ৩৮২ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ২১১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ১০৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে
১২ হাজার ৪৭৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১২ হাজার ৯০০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৪২৪টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২০৯৪ দশমিক ৮৫ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ১৫৬৭ দশমিক ৯০ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ২৯ দশমিক ৯০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায মৃত্যুবরণকারী ২১ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, আর নারী ৭ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ৯৪৯ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ১৪৪ জন; শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৭ দশমিক ৫৪ শতাংশ, আর নারী ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের সবাই হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৪ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন; যা শূন্য দশমিক ৪৭ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন; যা শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১১৮ জন; যা ২ দশমিক ৩২ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৯৪ জন; যা ৫ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৬৬১ জন; যা ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৩৮১ জন; যা ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ৫৭৩ জন; যা ৫০ দশমিক ৫২ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা বিভাগে ১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২ জন, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ১ জন করে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ৫২৩ জন; যা ৪৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৫২ জন; যা ২০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩৩৬ জন; যা ৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৪২৮ জন; যা ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৮৬ জন; যা ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২২৪ জন; যা ৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২৩৭ জন; যা ৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১০৭ জন; যা ২ দশমিক ১০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৫ হাজার ৪৫০টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৮১ জন ও শয্যা খালি আছে ৩ হাজার ৬৬৯টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯২টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৫৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৫৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৬২৫টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ১৬ জন ও শয্যা খালি আছে ২৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৮২৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ৫৬২টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৮৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১১৩টি । সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৩ হাজার ৬১৮টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৭৬২ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৮৫৬টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৩২টি, রোগী ভর্তি আছে ২৬০ জন এবং খালি আছে ২৭২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৮৬৭টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৫১৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৩৪১টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হওয়া ১ হাজার ৯৩২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬০ জন, রংপুর বিভাগে ৫১ জন, খুলনা বিভাগে ১৭৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৪৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ২১৩ জন, সিলেট বিভাগে ৬৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১১ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ২২৬ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৩০১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৮০ হাজার ২৮৫ জন, আর ছাড় পেয়েছেন ৬৪ হাজার ৩৭৪ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৫ হাজার ৯১১ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৯২০ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ২২৯ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৯ হাজার ২১৭ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৪ লাখ ৮৪ হাজার ৩৫৯ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪৪ হাজার ৮৫৮ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬১৪টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৪ হাজার ১১৩টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৬৭টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫১ হাজার ৮৯৪টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১০ লাখ ১৯ হাজার ২০২টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩৯৬ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৭৫ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৬২৮ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৩৮৫ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৬৪ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৪ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৬ হাজার ৮৪২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৩ কোটি ১৭ লাখ ৯৮ হাজার ৩০৮ জন এবং এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
সুত্র:বাসস।