যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। বুধবার এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার এ কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেসব সিদ্ধান্ত নেবে, সেগুলোতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন ও জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে, ম্যাথু মিলার বলেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তাঁরা এরই মধ্যে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সামনে কী পদক্ষেপ দেখতে চায়, তা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নেবে, তারা যেন গণতান্ত্রিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে কাজ করে, সেটি দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
এক প্রশ্নের জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, ‘বাংলাদেশে কী ঘটছে, তার ওপর আমরা নজর রাখছি এবং আমরা নিশ্চিতভাবেই মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতা নিয়োগ দিতে দেখছি। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে দীর্ঘ মেয়াদে শান্তি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আরেকজন মুখপাত্র ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারবিষয়ক সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক নীতি, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী হওয়া উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত আছি, যেহেতু তারা বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।’
ছাত্র–জনতার বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হচ্ছে। শান্তিতে নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আজ রাত সাড়ে আটটায় নতুন সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণ হবে বলে বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের (জয়) সর্বশেষ ভিডিও বার্তার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মিলার বলেন, নিজ দেশের কোনো নাগরিকের বক্তব্য নিয়ে তাঁর কোনো মন্তব্য নেই।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী সজীব ওয়াজেদ বুধবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘এই যে আমাদের বর্তমানে যাঁরাই আছেন ক্ষমতায়, তাঁদের আমি বলব, আমরাও একটি গণতান্ত্রিক, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ দেশ চাই, জঙ্গিবাদমুক্ত। তার জন্য আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শুধু তাঁরা যদি জঙ্গিবাদ, ভায়োলেন্স (সহিংসতা) বাদ দেন। শেখ হাসিনা মরে যাননি। আমরা কোথাও যাইনি। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া গণতন্ত্র, নির্বাচন সম্ভব না।’
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা সবাই সাহস নিয়ে দাঁড়ান, আমরা আছি। বঙ্গবন্ধুর পরিবার কোথাও যায়নি। আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি। দেশকে, আমাদের নেতা-কর্মীদের এবং আওয়ামী লীগকে রক্ষা করার জন্য যা প্রয়োজন, আমরা করতে প্রস্তুত।’
-UNB.