বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ম-নীতির বাইরে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তার স্বাধীনতার জায়গা অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছে। গত দশকেরও বেশি সময়ে ব্যাংকিং খাতে ২৪টি বড় ধরনের কেলেঙ্কারি ঘটেছে, যার মাধ্যমে ৯২,২৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ হয়েছে। সোমবার ঢাকার ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত “ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয়” শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।
সিপিডির মতে, কিছু ব্যাংক কার্যত মৃতপ্রায়, এবং অনেক ব্যাংক ‘ক্লিনিক্যালি মৃত’ অবস্থায় রয়েছে। সংস্থাটি সুপারিশ করেছে যে মৃতপ্রায় ব্যাংকগুলোর বর্তমান ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আনা উচিত এবং এসব ব্যাংকগুলোকে পুনরায় কার্যকর করার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, অনেক ব্যাংক ক্লিনিক্যালি মৃত হয়ে গেছে এবং এগুলো আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। সরকার এ সব ব্যাংককে অর্থ ও মূলধন দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু এদের স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হতে দেওয়া উচিত।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ১১টি ব্যাংক আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্রাসেল নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, তৃতীয় ও চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকগুলোও ক্লিনিক্যালি মৃত অবস্থায় রয়েছে। এক সময় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ একটি ভালো ব্যাংক ছিল, কিন্তু দখলের পরে এটি মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে।
সিপিডি ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে ও সমাধানে তিন মাসের জন্য একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে এবং ব্যাংক খাতে দ্বৈত প্রশাসন কমাতে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। এই বিভাগের কারণে সরকারি ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রণ এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে নেই।
সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্যাংকিং খাতের অপব্যবস্থা দূর করতে ব্যাংক কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।