জিই পাওয়ার (এনওয়াইএসই: জিই), রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড-এর মেঘনাঘাটে অবস্থিত ৭১৮ মেগাওয়াট (এমডব্লিউ) কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্ল্যান্টের জন্য উন্নত গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তি সংস্করণ অ্যাডভান্সড গ্যাস পাথ (এজিপি) সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে। রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড ভারতের রিলায়েন্স পাওয়ার ও জাপানের জিরা (জেইআরএ)-এর একটি যৌথ উদ্যোগ।
ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন (ইপিসি) গ্রুপ স্যামসাং সি অ্যান্ড টি দ্বারা নির্মিত মেঘনাঘাট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি দুটি জিই ৯এফ গ্যাস টারবাইন, একটি জিই ডি১১ স্টিম টারবাইন ও তিনটি এইচ৫৩ জেনারেটর দ্বারা পরিচালিত হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রি-গ্যাসফিড লিকুইফিড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) জ্বালানী ব্যবহার করা হবে, যা থেকে বাংলাদেশের ৮ লাখ পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি ঘরে প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্পটিতে কন্ট্রোল আপগ্রেড ও যন্ত্রাংশ সরবরাহের পাশাপাশি স্যামসাং সি অ্যান্ড টি-এর সাথে জিই-এর চুক্তিতে দুটি জিই ৯এফ.০৩ গ্যাস টারবাইন, স্টিম টারবাইন পুনর্নির্মাণের জন্য জিই-এর এজিপি আপগ্রেডটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি সফলভাবে বাস্তবায়ন হলে, এর উন্নত প্রযুক্তি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে পাওয়ার আউটপুট ৬.৭% বৃদ্ধি করতে সহায়ক হবে, তাপের হার ৩.৩% পর্যন্ত উন্নতি, দক্ষতা ২% বৃদ্ধিসহ অপারেশনাল ফ্লেক্সিবিলিটি ও মেন্টেনান্স ইন্টারভাল ৩২,০০০ ঘন্টা বাড়িয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
রিলায়েন্স বাংলাদেশ এলএনজি অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড-এর সিইও রঞ্জন লোহার বলেন, “বিশ্বের দ্রুততম অগ্রসরমান অর্থনীতির সেরা ৫ দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের উন্নয়নশীল অর্থনীতির চাহিদা পূরণে দীর্ঘমেয়াদী বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী বিদ্যুৎ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “প্রকল্পটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যাপক উৎসাহ দেবে এবং পরিচ্ছন্ন ও নির্ভরযোগ্য এলএনজি-ভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করবে। স্যামসাং সি অ্যান্ড টি-এর বৈশ্বিক দক্ষতার সাথে জিই-এর উন্নত প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ভবিষ্যতে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি ও সমৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।”
জিই সাউথ এশিয়ার গ্যাস পাওয়ার –এর সিইও দীপেশ নন্দ বলেন, “বাংলাদেশের বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ করার মাধ্যমে প্রযুক্তির সাথে গ্রাহকদের এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে জিই।”
তিনি আরও বলেন, “জিই এর এফ-ক্লাস প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত নতুন ৭১৮ মেগাওয়াট (এমডব্লিউ) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানী দক্ষতা ও কার্যকরী নির্ভরযোগ্যতার ভিত্তিতে বৈশ্বিক বেঞ্চমার্ক নির্ধারণ করবে। এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে বাংলাদেশের মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অবদান রাখবে।”
গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ঢাকার অদূরে অবস্থিত মেঘনাঘাটে একাধিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে, যা রাজধানী ঢাকার প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে।
বর্তমানে জিই’র ৩৮টি গ্যাস টারবাইন রয়েছে, যেগুলো বাংলাদেশে ৩ গিগাওয়াট (জিডব্লিউ) বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। প্রতিষ্ঠানটির এইচ-ক্লাস, ই-ক্লাস, এফ-ক্লাস, ফ্রেম ৬ এবং এরো-ডেরিভ্যাটিভস সহ গ্যাস টারবাইন প্রযুক্তির একটি শক্তিশালী পোর্টফোলিও রয়েছে, যা দেশের চলমান ও প্রক্রিয়াধীন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয়েছে।