বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন যে ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে দেশি-বিদেশি একটি চক্র মাইনোরিটি নির্যাতনের ভুয়া কাহিনী প্রচার করছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো শান্তিপ্রিয় দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা। বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও কালিবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে আসার পর তিনি জেলার ইসকন মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের সাথে কথা বলেছেন। এ সময় তার সাথে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি আগেও জেনেছি, এবং এখানে আসার পরও সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে আরও জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের জেলায় কিছু রাজনৈতিক গোলযোগ হয়েছে, তবে এটা কোনো সম্প্রদায় বা ধর্মীয় সংঘাত ছিল না। ৫ তারিখের পর এখানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যার ভিত্তিতে সংখ্যালঘু নির্যাতনের দাবি করা যায়। একটি চক্র, অর্থাৎ পতিত সরকার, পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন নাটক সাজিয়ে এসব গুজব ছড়াচ্ছে।”
আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের স্মরণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে চাই সেই বীর শহীদদের, যারা এই স্বৈরাচারী সরকারের পতনের আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন। আমি ধন্যবাদ জানাই ঠাকুরগাঁওয়ের সাহসী ছাত্র ও জনতাকে, যারা আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। ধন্যবাদ জানাই সাংবাদিকদের, যারা ঝুঁকি নিয়ে সত্য সংবাদ প্রচার করেছেন এবং গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন।”
বালিয়াডাঙ্গীর হিন্দু সম্প্রদায়ের দেশত্যাগের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে মাইনোরিটি লোকজন দেশত্যাগ করছে বলে যে নাটক সাজানো হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে নিশ্চিত হয়েছি যে এটি একটি মঞ্চস্থ নাটক ছিল। কারণ ওই লোকেরা খালি হাতে ছিল এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে আনেনি। তাদের উদ্দেশ্য ছিল মিথ্যাভাবে দেখানো যে তারা নির্যাতনের শিকার, তাই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এটি পুরোপুরি সাজানো অপপ্রচার।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দল এই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে সারা জেলায় কাজ করছে এবং এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। যদি আমাদের দলের কেউ এসব ঘটনায় জড়িত থাকে, প্রশাসনকে বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। আমরাও দলীয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেবো, যেমনটা আমরা অতীতে করেছি।”
তিনি জানান, “আমাদের এলাকায় ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় রাখতে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি। এ কাজে সাংবাদিকদের এবং দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি। বর্তমান সরকারকেও সহযোগিতা করার আহ্বান জানাই।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, পৌর বিএনপির সভাপতি পয়গাম আলী, স্থায়ী কমিটির সদস্য আল মামুনসহ বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।