ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই তাঁর ভিসা নীতি স্পষ্ট করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার নাগরিকদের কাজের সুযোগ দেওয়ার বদলে বিদেশ থেকে পেশাদার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী আনার ক্ষেত্রে তাঁর যে আপত্তি রয়েছে, তা জোর গলায় জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।
সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে নয়া প্রশাসনিক নির্দেশনামায় সই করে বিদেশি পেশাদারদের আমেরিকায় কাজ পাওয়ার পথে নতুন অন্তরায় তৈরি করলেন। এর ফলে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের আমেরিকায় কাজ করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নয়া ভিসা নীতি সংক্রান্ত প্রশাসনিক নির্দেশে সইয়ের আগে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমরা একটি সহজ নীতিকে গুরুত্ব দিয়েছি— আমেরিকার নাগরিকদের অগ্রাধিকার।’’ রাজনীতির কারবারিদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ‘পাখির চোখ’ করেই ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ।
ট্রাম্পের নয়া নীতি কার্যকর হলে এইচ-১বি ভিসায় কর্মরত বিদেশিদের চুক্তি বাতিল সহজ হয়ে যাবে। পাশাপাশি, এইচ-১বি ভিসায় বিদেশি নিয়োগের প্রক্রিয়া জটিল হয়ে যাবে। বস্তুত, গত ২৩ জুন মার্কিন নাগরিকদের বেশি বেতনের চাকরিতে সুযোগ দেওয়া এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে এইচ-১বি ভিসা নীতি বদল করার কথা জানিয়েছিল ট্রাম্প সরকার। সোমবার ট্রাম্পের সই করা প্রশাসনিক নির্দেশ জানাচ্ছে, ২৪ জুন থেকেই এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নয়া নীতি কার্যকর হচ্ছে।
ভারত ও চিন থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার কর্মী এইচ-১বি ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করতে যান। ক্ষমতায় আসার বছর খানেকের মধ্যেই ডোনাল্ড ট্রাম্প এইচ-১বি ভিসা অনুমোদনের হার ১০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছিলেন। সোমবার রাতে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের মন্তব্য, ‘‘যেমনটা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তেমনটাই করেছি। কোনও মার্কিন কমর্চারীকে সরিয়ে যাতে সেই জায়গায় বিদেশি নিয়োগ না করা যায়, তা নিশ্চিত করতে চেয়েছি। আমরা মনে করি, সাধারণ শ্রমের ক্ষেত্রে নয়, উচ্চ মেধা আর দক্ষতার ক্ষেত্রেই এইচ-১বি ব্যবহার করা উচিত।’’
নয়া প্রশাসনিক নির্দেশে ফেডেরাল এজেন্সিগুলিকে এ বিষয়ে সমীক্ষা ও মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, মার্কিন কর্মীদের স্বার্থরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে। সম্প্রতি মার্কিন সংস্থা টেনেসি ভ্যালি অথরিটি তাদের ২০ শতাংশ কাজ আউটসোসিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার জেরে প্রায় ২০০ মার্কিন কর্মীর ছাঁটাইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়। ট্রাম্পের অভিযোগ, করোনা অতিমারির আবহে এমন পদক্ষেপ কাম্য নয়। এমন ঘটনা রুখতে ভবিষ্যতে অভিবাসন নীতি সংশোধন সংক্রান্ত নতুন বিল নিয়ে আলোচনার কথাও বলেছেন |
– আনন্দবাজার।