সোমবার, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৩

আমাদের শিক্ষা ও আজকের ভাবনা

পাঠক প্রিয়

কিম-পুতিন সম্মেলনের তাৎপর্য

  --- এম এ হোসাইন  গত ১৩ই সেপ্টেম্বর, উত্তর কোরিয়ার নেতা চেয়ারম্যান কিম জং উন বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস সংকট পরবর্তী তার...

আধুনিক রাষ্ট্র ও নাগরিক জীবনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। আদিম বর্বর অব¯’া থেকে মানুষের বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে উত্তরণের শ্রেষ্ঠ সোপান হ”েছ শিক্ষা। জগৎ ও জীবন সম্পর্কিত বাস্তব ধারণাকেও জ্ঞান বা শিক্ষা বলে অভিহিত করা হয়। শিক্ষাকে পুঁজি করেই পৃথিবীর সেরা জাতিসমূহ উন্নতির স্বর্ণ শিখরে উঠতে সক্ষম হয়েছে

(লেখক :অধ্যক্ষ মোঃ শাহজাহান আলম সাজু

রক্তার্জিত স্বাধীন দেশে উন্নত-সমৃদ্ধ জীবন প্রত্যাশী জাতি হিসেবে আমাদের জীবনে শিক্ষার ভূমিকা অপরিসীম। শিক্ষা একটি দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ কিš‘ মানুষের সুকুমার বৃত্তি, মানবিকতার উৎকর্ষ সাধন এবং স্বয়ম্ভরতা অর্জনের শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার। জাতির ¯’ায়ীত্বশীল উন্নয়নে শিক্ষা একটি নিরন্তর প্রক্রিয়া। এ উপলদ্ধি এবং দৃঢ় বিশ্বাস থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্বাধীনতাত্তোর যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে আর্থিক সংকট সত্তে¡ও শিক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন। স্বল্পতম সময়ের মধ্যে যুগোপযোগি ও বিজ্ঞান মনস্ক ‘কুদরত-এ-খুদা’ শিক্ষা কমিশন গঠন করে কমিশনের সুপারিশের আলোকে সার্বজনীন শিক্ষা চালুকরণের ভিত্তি হিসেবে প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এবং পর্যায়ক্রমে পুরো শিক্ষা ব্যব¯’া জাতীয়করণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল অভিন্ন শিক্ষা ব্যব¯’া বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহমর্মিতা ও স্বদেশ প্রেমে উদ্দীপ্ত একটি উদার মানবিকতা সম্পন্ন আধুনিক সমাজ নির্মাণ করা। কিš‘ ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকান্ডের ফলে তাঁর মহান উদ্যোগ তথা পুরো জাতির স্বপ্ন-আশা ধূলিস্বাৎ হয়ে যায়। বাঙালি জাতির শত বছরের সফল সংগ্রামী ইতিহাস, ঐতিহ্য এমনকি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুখ থুবড়ে পড়ে। দেশ পশ্চাদমুখি ও কুপমন্ডুকতার অন্ধকার গহŸরে নিমজ্জিত হয়। দীর্ঘ ২১ বছরের প্রতীক্ষা, প্রতিরোধ, সংগ্রাম এবং আত্মত্যাগের বিনিময়ে জাতি বঙ্গবন্ধু মুজিবের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো হারানো মর্যাদা এবং অভীষ্ট লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে পায়।

শেখ হাসিনাও দেশ গঠন পরিকল্পনা ও কর্মযজ্ঞে শিক্ষাকে প্রাধান্য দেন। ঔপনিবেশিক শাসনের ঔরসজাত বিদ্বেষ সৃষ্টিকারক বৈষম্যমূলক শিক্ষা ব্যব¯’ার আমূল পরিবর্তনকল্পে সমাজের সর্বস্তরের সুশীল মানুষের মতামতের ভিত্তিতে যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে নানা কার্যক্রম শুরু করেন। পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ বিপুল সংখ্যক শিক্ষকদের শূন্য পদ পূরণ করেন। ৩৩০ টি কলেজ, ২২০টি হাইস্কুল জাতীয়করণ, ৪ হাজার ৩৫০টি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্তকরণ শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের যুগান্তকারী অন্যান্য পদক্ষেপ গুলো হ”েছ শিক্ষা কারিক্যুলাম, সিলেবাসের বাস্তব সম্মত পরিবর্তন, পরিমার্জন, ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা আওতাভূক্তকরণ, দশম শ্রেণিকে একাদশ, একাদশ শ্রেণিকে দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নীতকরণ, শিক্ষা ও শিখন ক্ষেত্রে সৃজনশীল পাঠ্যক্রম, পরীক্ষা পদ্ধতি ডিজিটালকরণ, গ্রেডিং পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ, বিড়ম্বনা ও বানিজ্য রোধকল্পে অনলাইনে ভর্তি, দ্রæততম সময়ে পরীক্ষার ফল প্রকাশ ইত্যাদি কার্যক্রমে আইসিটির উপর গুরুত্বারোপ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাশরুম চালু, কম্পিউটার ল্যাব ¯’াপনএবং বছরের শুরুতে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাদা কাগজে নতুন রঙীন বই প্রদান, কারিগরি বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রসার, নারীদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য নারী শিক্ষা অবৈতনিক এবং নি¤œ থেকে ¯œাতক পর্যন্ত উপবৃত্তি চালু করণ।

এছাড়া শত বছর ব্যাপী শিক্ষার মূল ¯্রােত ধারা থেকে বি”িছন্ন এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন মানসিকতায় বেড়ে ওঠা মাদ্রাসা শিক্ষা ও কারিক্যুলাম যুযোপযোগী করে মাদ্রাসা শিক্ষাকে সাধারণ শিক্ষার সমমর্যাদাভুক্ত করা হয়েছে। একটি সুবিন্যাস্ত নেটওয়ার্কের আওতাধীনে শিক্ষাকে তৃণমূল মানুষের দোড় গোড়ায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা ব্যব¯’ার অন্যতম দুষ্টক্ষত সরকারি বেসরকারি বৈষম্য উল্লেখযোগ্য হ্রাস পেয়েছে। দেশের শিক্ষার ক্ষেত্রে ৯৮% ভাগ ভূমিকা পালনকারি বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন যাবৎ নানা বৈষম্য, বঞ্চনার শিকার হ”েছন। এ নিয়ে ফি বছর তাদের কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি-নিবেদন, রাজপথে আন্দোলন করতে হয়েছে। শিক্ষা বান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদার মহানুভবতায় সে অব¯’ার বদল হয়েছে। দেশের পাঁচ লক্ষাধিক বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী আন্দোলন ছাড়াই এমপিওভুক্ত হয়েছে এবং জাতীয় বেতন স্কেলের আওতায় ১০০% বেতন পা”েছ।

সর্বশেষ সরকারি কর্মচারিদের ন্যয় তাদের বেতন দ্বিগুন হয়েছে; বছরান্তে বেতনের শতকরা ৫% ভাগ প্রবৃদ্ধি স্বয়ংক্রিয়ভাবে হ”েছ। এখন তারা উৎসব ভাতা, বৈশাখী ভাতা এবং যথাযথ না হলেও বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসাভাতা পা”েছন। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারিগণ সরকারের অর্থানুকূল্যে আকর্ষণীয় পরিমাণ কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা অর্থ পা”েছন। কল্যাণ এবং অবসর বোর্ডের আর্থিক সংকট নিরশনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ১৬৭৭ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ। সরকারি শিক্ষকদের অনুরূপ বেসরকারি শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হ”েছ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ ও শিক্ষার সুযোগ সুনিশ্চিত করার জন্য ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষায় পাশের হার বৃদ্ধি পেয়েছে, ঝড়ে পড়া হ্রাস পেয়েছে। এসবই বর্তমান সরকারের সদি”ছা ও আন্তরিক প্রচেষ্টার ফসল। এজন্য বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তারপরও একটা নীতিবাচক সমালোচনা, অতৃপ্তি এবং হতাশার সুর লক্ষ্য করা যায়। যে হারে শিক্ষার সুযোগ অবারিত হয়েছে, শিক্ষার গুণগত মান সে হারে বেড়েছে কি? এ নিয়ে বিতর্ক, বিতন্ডতা যতই থাক বাস্তব সত্যের কষ্টিপাথরে সমস্যার সমাধানে গভীর মনোনিবেশ এবং তদনুযায়ী কার্যকর কর্মপদ্ধতি গ্রহণের এখনই উপযুক্ত সময়।

শিক্ষা হ”েছ একটি অন্তহীন চলমান প্রক্রিয়া। শিক্ষার উদ্দেশ্য নিয়ে দুটি দৃষ্টিভঙ্গি লক্ষ্য করা যায়। একটি হ”েছ ব্যক্তির দেহমনের উন্নয়ন, ব্যক্তির স্বাত্যন্ত্রবাদের বিকাশ, কোন না কোন পেশায় নিয়োজিত হওয়ার প্র¯‘তি গ্রহণ একই সঙ্গে ব্যক্তির আত্মপরিচয়ের ভিত্তি রচনা করা। অপরটি হ”েছ ভালো নাগরিক হিসেবে ব্যক্তিকে গড়ে তোলা যাতে সে নিশ্চিতভাবে সমাজের কাজে আসে, উৎপাদনক্ষম মানুষ হিসেবে সমাজের উন্নয়নে অংশ নিতে পারে। সেজন্য তাকে পর্যাপ্ত জ্ঞান দান, সেই সাথে সাংস্কৃতিক মূল্যবোধে উদ্দীপ্ত করা। দুটো দৃষ্টি ভঙ্গি সম্পূরক এবং দু’য়ের যোগফলের নামই প্রকৃত শিক্ষা। যার মর্মকথা শিক্ষার মূল্যবোধের বিকাশ। শিক্ষা লাভের পর যদি কেউ ন্যায়-অন্যায়,ভালো-মন্দের ফারাক না বুঝে, ভালোর পক্ষে অসত্য, কদর্য ও মন্দের প্রতিরোধ করতে না পারে তাহলে সে শিক্ষা সম্পূর্ণটাই বৃথা। দূর্ভাগ্যজনক হ”েছ আমাদের বর্তমান শিক্ষায় এ চিত্রটাই প্রকট। শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি কিংবা প্রসারের জন্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার সংখ্যা বৃদ্ধির আবশ্যকতা আছে। কিš‘ প্রতিষ্ঠানের ক্রমবর্ধনশীলতার সাথে তাল মিলিয়ে উপযুক্ত, যথার্থ শিক্ষা নিশ্চিত হ”েছ কি?

পৃথিবীতে এমন কোন দেশ পাওয়া যাবে না শিক্ষায় পিছিয়ে থেকে আর্থ-সামাজিক উন্নতি সাধন করেছেন। আমাদের নীতি নির্ধারকরা সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষও শিক্ষা বলতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বৃদ্ধিতে, পাশের হার বাড়াতে যতটা সক্রিয় শিক্ষার মান অর্জন বা অর্জিত মান ধরে রাখতে ততটাই নিষ্ক্রিয়। ফলে সুদুর প্রসারি পরিকল্পনা বিহীন সারাদেশে প্রতি জেলায় সরকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করছে, বেসরকারি পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার ধূম পড়েছে। আমাদের রাজধানীর ন্যায় এত সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর কোথাও আছে কিনা জানা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা সনদ পা”েছ বটে যথার্থ এবং প্রকৃত শিক্ষা লাভ করছেনা। জ্ঞান অর্জনের আদর্শ পরিবেশ তথা দরজা জানালা বন্ধ রেখে শুধু পাঠ্যপুস্তকে নিমগ্ন থেকে যে করেই হোক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করাই এদের লক্ষ্য, জ্ঞান বৃদ্ধি নয়।

শিক্ষার মানের সঙ্গে পাঠ্য বই এবং শিক্ষকের মানের প্রশ্নও জড়িত। পাঠ্য বই/সিলেবাস হ”েছ একটি জাতির মানস গঠনের শ্রেষ্ঠ হাতিয়ার বা দর্পণ, আর শিক্ষক হ”েছন জাতি গঠনের কারিগর। ফরমায়েশি পাঠ্য পুস্তক কিংবা নীতি বিবর্জিত, দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত মেধাশূন্য, অযোগ্য শিক্ষক উভয়ই এ দর্শনের পরিপš’ী। শিক্ষা এমন একটি ক্ষমতা যেখানে আপস কিংবা গুজামিলের সুযোগ নাই। শিক্ষায় গুজামিল থাকলে সৃজনশীলতা, মুক্ত চিন্তার প্রকাশ সংকুচিত, বাঁধাগ্র¯’ হয়, দূরাচার, দূর্নীতি বৃদ্ধি পায় এবং মানবিক মূল্যবোধ লোপ পায়। সমাজ সরল ভাবে এগুতে পারেনা। সহিঞ্চু ও সৃজনশীল বলে বাঙালির সুনাম ছিল, প্রাকৃতিক ও মানবিক যে কোন বিপর্যয়ে সরকারের আগে মানুষই এগিয়ে আসতো, বিপন্নদের সাহায্য করতো। এখন সবাই নিজেরটা নিয়ে ব্যস্ত। স্বার্থ, লোভ, লালসা আখের গোছানোর উগ্র বাসনা, আধিপত্য বিস্তারের উন্মাদনার কাছে সব মূল্যবোধ ¤øান হয়ে পড়েছে। মানুষ কতটা নির্দয়, পাষন্ড হলে তিন বছরের শিশু ধর্ষিত হয়, কোমলমতির কিশোরেরা পাড়া মহল্লায় গ্যাংস্টার বাহিনী গড়ে তুলে তু”ছ কারণে নিজেরা হানাহানিতে লিপ্ত হয়। এসবে আত্মকেন্দ্রিক ভাবনা, পুঁজিবাদী সমাজ, নগরায়ন এবং বিশ্বায়নের প্রভাব থাকলেও প্রকৃতপক্ষে আমাদের শিক্ষার গলদই এর জন্য দায়ী। আদর্শহীন সুবিধাবাদী রাজনীতির কথাও চলে আসে। যে শিক্ষা মানুষকে অন্তঃ¯’ল থেকে আলোকিত করে না, আদর্শ উন্নত জীবন ও সুষ্ঠু নেতৃত্বের উপযোগী করে না সর্বোপরি ন্যায়- পরায়ণ, মানবিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমে উজ্জ্বীবিত করেনা সে শিক্ষা শিক্ষা নয়। আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে দার্শনিক সক্রেটিস ‘‘কহড়ি ঞযুংবষভ এবং ঠরৎঃঁব রং শহড়ষিবফমব” উক্তির মাধ্যমে একথাই বলেছেন।

কাজেই প্রকৃত অর্থে শিক্ষিত জাতি হতে হলে আমাদের সর্বাগ্রে শিক্ষানীতির অসঙ্গতি দূর করতে হবে। শিক্ষাকে মনোগ্রাহী ও সৃজনশীল করতে হবে। দেশের খ্যাতিমান চিন্তাবিদ, অভিজ্ঞ ও নির্মোহ শিক্ষকদের দিয়ে পাঠ্যবই তৈরি করতে হবে। শিক্ষাদানের জন্য মেধাবী, নিবেদিত প্রাণ শিক্ষক নিয়োগ এবং তার জন্য শিক্ষকতা পেশাকে আকর্ষণীয় ও সর্বো”চ মর্যাদা দিতে হবে। শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিসহ চাকরির নিরাপত্তা বিধান এবং পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যব¯’া করতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যের সম্পূর্ণ অবসানকল্পে দেশে অভিন্ন শিক্ষা ব্যব¯’া প্রবর্তন এবং এর পূর্ব শর্ত হিসেবে শিক্ষা ব্যব¯’া জাতীয়করণ করতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহ শিক্ষা কার্যক্রম ও ভৌত অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি, দেহ-মনের গঠন ও চিত্ত বিনোদনের ব্যব¯’া করতে হবে। শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষকদের দ্বারা পরিচালনার জন্য যোগ্যব্যক্তিদের উপযুক্ত ¯’ানে নিয়োগ দিতে হবে। এটা মুক্ত বাজার, বিশ্বায়নের যুগ। এখন সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা অর্জন করে টিকে থাকতে হবে। এ মুহূর্তে আমরা ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া কিংবা কানাডার শিক্ষার মানের সমকক্ষ হবার কথা বলছি না, কিš‘ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার চেয়ে আমাদের শিক্ষার মান পিছিয়ে থাকাটাও শোভা পায় না । স্বাধীনতাত্তোর কয়েকটি প্রজন্ম চলে গেছে সত্য, কিš‘ আজকের প্রজন্ম নিঃসন্দেহে একটু ভিন্ন যারা মুক্ত চিন্তা, বিজ্ঞান চর্চা, নতুনের উদ্ভাবন ও সৃজনে উদ্যোগী। আমাদের সময়ের সেরা ১০ জনের তুলনায় আজকের পরীক্ষার ফলাফলে সেরা ১০ জন অনেক বেশি মেধাবী, জ্ঞানের প্রতিটি জগতে বিচরণে অভিলাষী। একটা সময় ছিল মেধাবীরা বিদেশে গেলে ফিরত না, এখন পড়াশোনা পশ্চিমা দেশগুলোতে অব¯’ানের কঠোরতা এবং দেশের টানেও ফিরতে চায়, দেশ গঠনে নিজের সেরাটা দিতে চায়। এর জন্য বর্তমানে সৃজনশীল কাজের যে ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে তার পরিধি আরো বিস্তৃতি করতে হবে। প্রতিযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

পরিশেষে, শিক্ষা দিবস হিসেবে আজকের দিনটি স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ বরাবর পালন করে থাকে। সারা বছর জুড়ে সরকারের বিভিন্ন দিবস উদযাপন তালিকায় জাতীয়ভাবে শিক্ষা দিবস পালনের কর্মসূচী অন্তর্ভূক্ত হলে দিবসটির গুরুত্ব বাড়বে। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে সেমিনার, আলোচনা, পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের সংস্কৃতি সরকারে শিক্ষা কর্মসূচী বাস্তবায়নে অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে এবং একটি সুশিক্ষিত ও মেধাবী জাতি হিসেবে আমাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

(লেখক : সাবেক ছাত্রনেতা, সাধারণ সম্পাদক, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ, সেক্রেটারী, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব টিচার্স ইউনিয়ন, সচিব, শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট, শিক্ষা মন্ত্রণালয়)

সর্বশেষ সংবাদ

ফিলিস্তিনিদের পূর্ণ অধিকার ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি হবে না

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৃহস্পতিবার বলেছেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের বৈধ অধিকার পুরোপুরি উপভোগ না করতে পারলে মধ্যপ্রাচ্যে কোন শান্তি হবে...

কিম-পুতিন সম্মেলনের তাৎপর্য

  --- এম এ হোসাইন  গত ১৩ই সেপ্টেম্বর, উত্তর কোরিয়ার নেতা চেয়ারম্যান কিম জং উন বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস সংকট পরবর্তী তার প্রথম বিদেশ ভ্রমণ শুরু করেন।...

ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করলো বাংলাদেশ

দুর্দান্ত ব্যাটিং-বোলিং নৈপুন্যে জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শেষ করলো বাংলাদেশ। আজ সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ ৬ রানে হারিয়েছে আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করা...

এ্যাসোসিয়েশন অব রেডিও লিসেনার্স ক্লাব গঠিত

গঠিত হলো বাংলাদেশের বেতার শ্রোতা ক্লাব প্রতিনিধিদের নিয়ে এ্যাসোসিয়েশন অব রেডিও লিসেনার্স ক্লাব বাংলাদেশ (এআরএলসিবি) এক আনন্দঘন, উৎসবমুখর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ঢাকায় "এ্যাসোসিয়েশন অব রেডিও...

ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ক আরও জোরদারে শেখ হাসিনা-মোদির ঐকমত্য

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে উভয় দেশের মধ্যে বিদ্যমান গভীর সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং একই সঙ্গে...

জনপ্রিয় সংবাদ

সিভি এবং চাকুরী আবেদনের কিছু প্রয়োজনীয় টিপস

মানবসম্পদ বিভাগে কাজ করার বদৌলতে প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখে পরতে হয়। যার অধিকাংশই আসে সিভিকে কেন্দ্র করে। আমি সিরিজ আকারে সিভি এবং ক্যারিয়ার...

মিথ্যা সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে তুরাগ থানা ছাত্রলীগ

তুরাগ থানা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ আরিফ হাসান জানায়, গত ১১-০৮-২০২০ তারিখে ’আমার প্রাণের বাংলাদেশ’ নামক পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘রাজধানীর উত্তরা যুবলীগ নেতা নাজমুল হাসান...

 ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েট পদে নিয়োগ জোরদার করলো মেটলাইফ বাংলাদেশ

ফিনান্সিয়াল অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগদানে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য ডিজিটাল নিয়োগ প্ল্যাটফর্ম উন্মোচন করেছে মেটলাইফ বাংলাদেশে। অনন্য এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আগ্রহী প্রার্থীদেরকে বাসা থেকেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে...

২৩ কোটি বছরের পুরনো হিরকখণ্ড উদ্ধার!

দেখতে কি সুন্দর হিরকখণ্ডটি । শুক্রবার রাশিয়ার অ্যানাবার নদীর ধারে আলরোসার এবেলিয়াখ খনি থেকে উদ্ধার হয় এই হিরক খণ্ডটি। এখনও স্থির হয়নি হিরকখণ্ডটি পালিশ...