মাথার ওপর পরিষ্কার আকাশ। ওল্ড ট্রাফোর্ডের উইকেট ছিল ব্যাটসম্যানদের জন্য স্বর্গ। শুরুতেই আঁচ করা যাচ্ছিল, ইংল্যান্ড ও পাকিস্তানের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি হবে রান বন্যার। শেষ পর্যন্ত তাই হলো। পাকিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ১৯৬ রানের লক্ষ্য ৫ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেট হারিয়ে তাড়া করে ইংল্যান্ড। ৫ উইকেটের বড় জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ইংল্যান্ড।
কাজটা সহজ করে দেন ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও টম বেন্টন। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে ওভার প্রতি ১০ এর বেশি করে রান তুলে ভিত গড়ে দেন এই দুই ওপেনার। আগের ম্যাচে ফিফটি করা বেন্টন নয়, এবার বেয়ারস্টোর ঝড় দেখে পাকিস্তান। মাত্র ২৪ বলে ৪৪ রান যোগ করে ব্যাটিং পাওয়ারপ্লের ঠিক পরের ওভারেই আউট হন। শাদাব খানের স্পিনে আউট হওয়ায় ৬৬ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙে ইংল্যান্ডের। দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়ে বেয়ারস্টোর পর বেন্টনের আউটে।
তবে অভিজ্ঞ অধিনায়ক এউইন মরগান বিপদ সামাল দেন। ডেভিড মালানকে নিয়ে ১১২ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানের জয় ছিনিয়ে নেন মরগান। মাত্র ৩৩ বলে ৬৬ রান করেন মরগান। ম্যাচ জয়ের খুব কাছে এসে আউট হন তিনি। সহ অধিনায়ক মঈন আলী ও স্যাম বিলিংস মরগানের মতো ম্যাচ শেষ না করেই আউট হন। শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন তিনে নামা মালান। ৩৬ বলে ৫৪ রান করে অপরাজিত থাকেন মালান।
ইংল্যান্ডের ৩ উইকেট নেওয়া শাদাব ছাড়া পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে কেউই প্রভাব ফেলতে পারেননি। ইনিংসের শুরুতে মোহাম্মদ আমির হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন। বাকিরা মরগান-মালানের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি।
ইংল্যান্ডের মতো পাকিস্তানের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটাও ছিল দারুণ। বাবর আজম ও ফখর জামানকে খুব বেশি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারেনি ইংল্যান্ডের আনকোরা বোলিং লাইন আপ। সাকিব মাহমুদ, ক্রিস জর্ডান, টম কারেনদের প্রথম ছয় ওভারের বোলিং ছিল এলোমেলো। ওল্ড ট্রাফোর্ডের ব্যাটিং স্বর্গে যেন লাইন-লেংথই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তরুণ ইংলিশ বোলাররা।
আর সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে বাবর-ফখর জুটি। ওপেনিং জুটিতে ৭২ রান করে এই দুই পাকিস্তানি ওপেনার। আদিল রশিদের লেগ স্পিনে জুটি ভাঙে পাকিস্তানের। উইকেট পড়লেও বাবর দেখিয়ে দেন কেন তিনি টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটসম্যান। ইনিংসের শুরুতে ৪৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংসটি ছিল চোখ আটকে রাখার মতো। তবে রাশিদের স্পিনে মাঝের ওভারে এসে খেই হারাতে হয় বাবরকেও। আউট হওয়ার আগে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ১৫০০ রান পূর্ণ করেন বাবর।দুই ওপেনার আউট হলে রানের গতি কিছুটা থেমে আসে। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজের ব্যাটে রান রেটের সমস্যার সমাধান পায় পাকিস্তান। প্রথমে শোয়েব মালিক ও পরে ইফতেখার আহমেদের সঙ্গে জুটি গড়ে পাকিস্তানকে ৪ উইকেট ১৯৫ রানে পৌঁছে দেন হাফিজ। মাত্র ৩৬ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে টি-টোয়েন্টিতে ২ হাজার রান ছাড়িয়ে যান হাফিজ।