শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অফিস খোলার দ্বিতীয় দিনে বুধবার (৭ আগস্ট) অস্থিরতা শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকেও। বিক্ষুদ্ধ একদল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ডেপুটি চার গভর্নরকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বের করে দিয়েছে ব্যাংকটির বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা। শুধু তাই নয়, একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে জোরপূর্বক পদত্যাগের জন্য সই নিয়েছে। বাকি তিন জন ব্যাংক থেকে পালিয়ে বেঁচেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, চার ডেপুটি গভর্নর এবং আর্থিক গোয়েন্দা দপ্তরের প্রধান বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের দাবির মুখে ‘পদত্যাগ’ করেছেন এবং যাঁরা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছেন। এ সময় সেনাসদস্যরা তাঁদের নিরাপত্তা দেন। তবে ঘটনার সময় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার কার্যালয়ে ছিলেন না।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা এরপর ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারের কক্ষে যান। ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার জানান, তিনি কার্যালয় ত্যাগ করছেন। বাকি দুই ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম ও মো. হাবিবুর রহমান কার্যালয়ে ছিলেন না। তবে কর্মচারীরা তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানান, তাঁরা অফিসে আর আসবেন না। একইভাবে ব্যাংকের উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসের ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাসুদ বিশ্বাসও জানান, তাঁরা আর ব্যাংকে আসবেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এসব কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। আন্দোলনকারী কর্মকর্তা–কর্মচারীরা তাঁদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন পর্যন্ত গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ব্যাংকে আসেননি।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা “স্বৈরাচার হাসিনার দোসর” হিসেবে যারা কাজ করেছেন, তাদের পদত্যাগ দাবি করেন। “ভুয়া ভুয়া” শব্দে প্রকম্পিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা। এরপর ডেপুটি গভর্নর-১ কাজী সাইদুর রহমান অফিস ত্যাগ করেন। এরপর একে একে অপর তিন ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহার বেগম, খুরশিদ আলম ও হাবিবুর রহমান অফিস ত্যাগ করেন। এসময় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের হেড মাসুদ বিশ্বাসও অফিস ছাড়েন।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা পদত্যাগ চেয়েছেন চার ডিজি, বিএফআইইউর হেড ও পলিসি অ্যাডভাইজারের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোন মন্তব্য করেননি মানবসম্পদ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক। মুখপাত্রও ফোন ধরেননি।