করোনার প্রভাব থেকে দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষায় শিল্পখাতের জন্য প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার। ঘোষিত ওই প্রণোদনা প্যাকেজের অর্ধেকের বেশি নিয়েছে তৈরি পোশাক খাত। কিন্তু এর পরও ৪২ শতাংশ শ্রমিক বঞ্চিত হয়েছেন প্রণোদনার অর্থ থেকে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।’তৈরি পোশাক খাতে করোনা ভাইরাস উদ্ভূত সংকট: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এই প্রতিবেদন আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) ভার্চুয়ালি উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী কর্মসূচি ব্যবস্থাপক নাজমুল হুদা মিনা ও নুরে আলম মিল্টন। এছাড়া পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ড. ইফতেখারুজ্জামান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাত মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মাত্র ১০ শতাংশ অবদান রেখে প্রণোদনার অর্থের অর্ধেকের বেশি নিয়েছে। সরকার ১৯টি প্যাকেজের আওতায় সরকার ১ লাখ ১৩ হাজার ১১৭ কোটি কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। এর প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ পায় পোশাক খাত।
অন্যদিকে শ্রমিকদের দোহাই দিয়ে এই প্রণোদনা নেওয়া হলেও বরাদ্ধের মাত্র ১৬ শতাংশ পেয়েছে শ্রমিকরা। এছাড়া পোশাক খাতের মোট ৩০ লাখ শ্রমিকের মধ্যে ৫৮ শতাংশ শ্রমিক প্রণোদনার অর্থ পেলেও ৪২ শতাংশ শ্রমিক এর কোনো সুবিধা পায়নি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, চার দশকের এই শিল্প এখনো সরকার ও জনগণের টাকার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সংকট মোকাবেলায় মালিকরা নিজেদের আত্মমর্যাদা দেখাতে পারেননি।
প্রণোদনার টাকা পেলেও শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিয়ে তেমন কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি শ্রম আইন না মেনে কারখানা লে-অফ করা হয়েছে। প্রণোদনার ক্ষুদ্র অংশ পেয়েছে শ্রমিক পক্ষ। এটি মাত্র ১৬ শতাংশ এবং তা বিতরণ করা হয়েছে বৈষম্যমূলক।
করোনার এমন সংকটের সময়ও ৬৪ কারখানার কারখানার ২১ হাজার শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। তবে মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর চাপে একপর্যায়ে শিল্প পুলিশ ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠান ও পরিদর্শন অধিদপ্তর তথ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
সূত্র: কালের কন্ঠ