হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার পর রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন।
দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক শেখ আহমদ প্রথম আলোকে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। সন্ধ্যার সাতটার দিকে শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুর খবর চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়।
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ জানান, আহমদ শফীর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর।
মাদ্রাসার দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আজ বিকেলে আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় আনা হয়। এরপর তাঁকে গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতা ছাড়াও ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনে ভুগছিলেন।
শাহ আহমদ শফীর জন্ম চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পাখিয়ারটিলা গ্রামে। তাঁর বাবার নাম বরকম আলী, মা মোছাম্মাৎ মেহেরুন্নেছা বেগম। আহমদ শফীর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। তাঁর বড় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ পাখিয়ারটিলা কওমি মাদ্রাসার পরিচালক। ছোট ছেলে আনাস মাদানি হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক।
আহমদ শফীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটা মাদ্রাসায়। এরপর পটিয়ার আল জামিয়াতুল আরাবিয়া মাদ্রাসায় (জিরি মাদ্রাসা) লেখাপড়া করেন। ১৯৪০ সালে তিনি হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৯৫০ সালে তিনি ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসায় যান, সেখানে চার বছর লেখাপড়া করেন।
১৯৮৬ সালে হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক পদে যোগ দেন আহমদ শফী। এরপর থেকে টানা ৩৪ বছর ধরে তিনি ওই পদে ছিলেন। ছাত্রদের বিক্ষোভের পর গত বৃহস্পতিবার রাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার শুরা কমিটির সভায় আহমদ শফী মহাপরিচালকের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তাঁর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালকের পদ থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর পরপরই মাদ্রাসা থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে আহমদ শফীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহমদ শফী কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার চেয়ারম্যান ছিলেন।