আসমান-জমিন সৃষ্টিসহ পৃথিবীতে অনেক স্মরণীয় ও যুগান্তকারী ঘটনা এ মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ পবিত্র আশুরার দিন সংঘটিত হয়েছিল।
আশুরার কারণে মহররম মাসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য অপরিসীম। আল্লাহতায়ালার প্রিয় মাস মহররম।
মহান আল্লাহ এরশাদ করেন, নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে বিধান ও গণনা হিসেবে মাস হল বারোটি আসমান ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। সুতরাং এ মাসে তোমরা নিজেদের প্রতি জুলুম করো না। (সূরা তাওবাহ : ৩৬)
হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, দেখলেন মদীনার ইহুদিরা আশুরার দিবসে রোজা পালন করছে।
তাদেরকে রোজা রাাখার কারণ জিজ্ঞেস করা হলে তারা বললো, এই দিনটি আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই দিনে আল্লাহতায়ালা মুসা (আ.) এবং তার সম্প্রদায় বনী ইসরাঈলকে ফেরআউনের কবল থেকে মুক্ত করেছেন এবং তার ওপর বিজয় দান করেছেন।
আর তারই শুকরিয়া হিসেবে এদিনে মুসা (আ.) রোজা রেখেছিলেন। তাই আমরাও এই দিনে রোজা রাখি।
তখন রাসুল (সা.) বললেন মুসা (আ.) এর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তোমাদের চেয়ে আমিই বেশি হকদার। তারপর তিনি নিজেও রোজা রাখলেন এবং সাহাবিদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। (মুসলিম : ২৬৫৩)।
তবে ইহুদিরা আশুরা উপলক্ষে একদিন রোজা রাখে। তাদের রোজার সঙ্গে যেন মুসলমানদের রোজার সাদৃশ্য না হয়, তাই মুসলমানরা আশুরার রোজার সঙ্গে ৯ অথবা ১১ তারিখে আরো একটি রোজা বৃদ্ধি করে মোট দুইটি রোজা রাখবে।
হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রমজানের রোজার পর সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ রোজা হলো মহররমের রোজা। (তিরমিজি : ২৪৩৮)
হজরত মুয়াবিয়া (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন- আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি যে, আশুরার রোজা তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়নি বটে, কিন্তু আমি এই দিন রোজা রাখবো। যার ইচ্ছা হয় সে এই রোজা রাখতে পারো এবং ইচ্ছে হলে তা ছাড়তেও পারো। (বুখারি : ১৮৬৫)
রাসুল (সা.) বলেন, তোমরা আশুরার রোজা রাখো এবং এই দিনে ইহুদিদের রোজার বিরোধিতা করো। তোমরা আশুরার রোজার সঙ্গে আগে অথবা একদিন পরে আরো একটি রোজা মিলিয়ে রাখবে। (বুখারি : ১৮৬৫)
কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসূল (সা.) বলেন, ‘আমি আশা করি, আশুরা বা দশই মহররমের রোজা আল্লাহর কাছে বান্দার বিগত এক বছরের (ছগিরা) গোনাহের কাফ্ফারা হিসেবে গণ্য হবে’। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০৪৪)।
—-