“আপনি কি অঙ্গীকার করছেন যে নির্বাচনের পরে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হবে?”আমেরিকার মত দেশের রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টকে এ প্রশ্ন করলে তার একটাই উত্তর পেতে পারে বলেই মনে করা হয়।তা হলো: “হ্যাঁ”
আসলে নির্বাচনের পাঁচ সপ্তাহ আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে এমন প্রশ্ন করতেও শোনা যায় না। কারণ এর যে অন্য কোন উত্তর হতে পারে সেটাও অকল্পনীয়।
ভোটের পর পরাজিত পক্ষ ফলাফল মেনে নিচ্ছে না – এমন ঘটনা শুধু তৃতীয় বিশ্বের দেশেই হয়তো ঘটতে পারে বলে মনে করা হয়।
কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হবার পর সেখানে এমন অনেক কিছুই ঘটে গেছে যা দেশটির ইতিহাসে প্রায় নজিরবিহীন।
নির্বাচনের মাত্র পাঁচ-ছয় সপ্তাহ বাকি থাকতে ডোনাল্ড ট্রাম্প এমনি এক বিস্ফোরক কথা বলেছেন।
বুধবার হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, নির্বাচনে যদি তিনি পরাজিত হন তাহলে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে – এমন নিশ্চয়তা তিনি দিচ্ছেন কিনা।
জবাবে মি. ট্রাম্প বললেন, “দেখা যাক কী হয়”, তার পর তিনি ডাকযোগে দেয়া ভোটের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে তার সন্দেহের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন।
তার পর বললেন, “খোলাখুলি বলতে গেলে, আপনারা দেখবেন যে হস্তান্তর নয়, ‘অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ’ ধারাবাহিকতা থাকবে।”
অর্থাৎ তিনিই প্রেসিডেন্ট থাকবেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের দরকার হবে না।
তার আগে রোববার ফক্স নিউজের সাথে আরেক সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ক্রিস ওয়ালেস জানতে চেয়েছিলেন, মি. ট্রাম্প ২০২০ নির্বাচনের ফল মেনে নেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কিনা।
তিনি জবাব দিলেন, “আমি এক্ষুণি ‘হ্যাঁ’ বলছি না।”
এর পর জোর আলোচনা-বিতর্ক শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ।
সবার মনে প্রশ্ন: নভেম্বরের ৩ তারিখ যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে তাতে মি ট্রাম্প হেরে গেলে – তিনি কি আদৌ ফলাফল মেনে নেবেন? এবং ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবেন ?
আরো বড় প্রশ্ন: নির্বাচনের ফল মেনে না নিলে কী হবে?
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক যুগে সব প্রেসিডেন্টই নির্বাচনের ফল বিপক্ষে গেলে হার স্বীকার করে নিয়েছেন।
কিন্তু মি. ট্রাম্প যদি নির্বাচনের ফল মানতে অস্বীকার করেন, তা হবে সাম্প্রতিককালের এক অভূতপূর্ব ঘটনা এবং সেক্ষেত্রে কি ঘটবে তা স্পষ্ট নয়।
তার প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন বলেছেন, সে ক্ষেত্রে হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্পকে সরিয়ে দিতে সামরিক বাহিনী ডাকা হতে পারে।
রিপাব্লিকান সেনেটর মিট রমনি বুধবার টুইট করেন, “শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর গণতন্ত্রের মৌলিক ব্যাপার, এটা না থাকার মানে হচ্ছে বেলারুস হয়ে যাওয়া।”
সেনেটে রিপাব্লিকান নেতা মিচ ম্যাককনেল বলেন, নির্বাচনে যিনি জিতবেন, জানুয়ারি মাসে তার অভিষেক হবে। যুক্তরাষ্ট্রে ১৭৯২ সাল থেকে যেভাবে সুশৃঙ্খলভাবে ক্ষমতার হস্তান্তর হচ্ছে – এবারও তাই হবে।