ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী এর সম্পাদনায় ‘দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র: নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশন’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর ঢাকাস্থ লিয়াজোঁ অফিসে রবিবার (জুলাই ২৬, ২০২০ খ্রি. তারিখে বিকাল ৩:০০টায়) গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ-এর মাননীয় সংসদ সদস্য (চাঁদপুর-১) জনাব ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এ বইটিকে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহে গণতন্ত্র রূপায়নে প্রয়োজনীয় প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী কর্তৃপক্ষকে পথনির্দেশনা দিয়ে সহায়তা করবে। বিশেষত ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থাকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য আদর্শ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এ বইয়ে ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থার যে বিশ্লেষণ করা হয়েছে তা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয়। এক্ষেত্রে তিনি ভারতের নির্বাচনে সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের সুযোগ না থাকা এবং নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে সিভিল প্রশাসনের পেশাদার ভ‚মিকার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি হিসেবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য জনাব ড. রিয়াজুল হাসান এ বইটিকে দক্ষিণ এশিয়ার নির্বাচন বিষয়ে একটি অনন্য গ্রন্থ হিসেবে উল্লেখ করেন। দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সামগ্রিকভাবে দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে তিনি তুলনামূলকভাবে অধিক ভঙ্গুর নির্বাচন ব্যবস্থাসমূহের উন্নয়নে এ বই ভ‚মিকা রাখতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিন এ বইটি বাংলা ভাষায় রচনা করার মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে যাওয়ার এ উদ্যোগকে বিশেষভাবে স্বাগত জানান। উপস্থিত লেখকদের প্রতিনিধি হিসেবে ড. এম আবুল কাশেম মজুমদার, প্রো-ভিসি, বাংলাদেশে ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্ এবং রিতু কুন্ডু, সহকারী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এ বই রচনার প্রক্রিয়ায় লেখকদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করেন।
এ বইয়ের অধ্যায়গুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের নির্বাচন এবং নির্বাচন কমিশনসমূহের কার্যক্রম ও ভ‚মিকার গুণগত বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ গ্রন্থটি যারা দক্ষিণ এশিয়ার গণতন্ত্র এবং নির্বাচন নিয়ে গবেষণা করেন শুধুমাত্র তাঁদের জন্যই নয় বরং নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক জ্ঞান অর্জনে ইচ্ছুক সকল পাঠকের জন্য রচিত। বিশেষত সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আগ্রহী শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য এ বইটি একটি মূল্যবান রেফারেন্স গ্রন্থ হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বব্যাপী জনগণের যথার্থ প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহে নির্বাচন ব্যবস্থায় যে বৈচিত্র্য রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহেও তা দৃশ্যমান। এ অঞ্চলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রাধান্য থাকলেও আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব এবং মিশ্র ব্যবস্থারও প্রচলন রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বইটিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের স্বতন্ত্র নির্বাচন ব্যবস্থা এবং নির্বাচন কমিশনগুলোর অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বইটির সম্পাদকদ্বয় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে গবেষণা ও প্রকাশনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর উপাচার্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের গ্রেড-১ প্রফেসর। তিনি জানিপপ-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। ড. সাবের আহমেদ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং জানিপপের বিভাগীয় সমন্বয়কারী। এ বইয়ের সম্পাদক ও লেখকগণের নির্বাচন ও গবেষণা সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা অত্র বইয়ের বিশ্লেষণী উপস্থাপনায় এক নতুন মাত্রার সংযোজন করেছে।
সম্পাদকদ্বয় ছাড়াও বইটির বিভিন্ন অধ্যায়ের লেখকগণ হলো জনাব ড. এম আবুল কাশেম মজুমদার, জনাব রিতু কুন্ডু, সহকারী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; জনাব দেওয়ান নুসরাত জাহান, সহকারী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়; জনাব মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, প্রভাষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস; জনাব মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম, প্রভাষক, লোক প্রশাসন বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর; জনাব এম. এম. আসাদুজ্জামান নুর, সহকারী অধ্যাপক, লোক প্রশাসন বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস; জনাব মাহফুজুর রহমান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস; জনাব ত্বহা হুসাইন, প্রভাষক, জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর; জনাব মো. হাবিবুর রহমান, প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জানিপপ, জনাব তাপসী রাবেয়া, প্রভাষক, দর্শন বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল এবং আরোও অনেকে।
বইটি প্রকাশনায় রয়েছে শিল্পৈষী (৩৩০, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেট, কাঁটাবন, ঢাকা, ০১৬১০১২৭৪৬৭) এবং পরিবেশনায় এএইচ ডেভেলপমেন্ট পাবলিশিং হাউজ (১৪৩, নিউমার্কেট, ঢাকা, ০১৭১৫০২২৯২৭), পূর্বা প্রকাশনী (ঢাকা, ০১৭১২৭১৪১৮৭), এবং প্রকৃতি (কাঁটাবন, ঢাকা, ০১৭২৭৩২৮৭২৩)। দ্য ডেইলি নিউ ন্যাশন, ভোরের পাতা, দৈনিক লাল সবুজের দেশ এবং পিপল্স টাইমস এ অনুষ্ঠানের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে সংযুক্ত ছিলো।