মানবদেহে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া চীনের উহাননগরের বিদ্যালয়গুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। সাত মাস পর গতকাল মঙ্গলবার খুদে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। শিশুদের পদচারণে মুখরিত হয়ে উঠেছে তাদের প্রিয় ক্যাম্পাস।
গতকাল প্রায় দুই হাজার ৮০০ কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক স্কুলে ১৪ লাখের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। এর আগে গত মে মাসে সেখানকার মাধ্যমিকের বিদ্যাপীঠ খুলে দেওয়া হয়।
চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রাত্যহিক রুটিনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা দেশটির পতাকা উড়াচ্ছে। তবে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকায় কোথাও জটলা পাকাতে দেখা যায়নি তাদের।
করোনাভাইরাসের আঁতুড়ঘর হলেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হয়েছে চীন। দেশটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। অনেকটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বের বৃহত্তম দেশটি।
গত সপ্তাহে নগরের কর্মকর্তারা বলেন, নতুন করে প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে যাতে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যায় তার প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে। শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসা-যাওয়ার সময় মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সম্ভব হলে বাস-ট্রেনের মতো গণপরিহন এড়াতেও বলা হয়েছে।
গত ৩১ ডিসেম্বর উহানে প্রথমবারেরর মতো করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। জানুয়ারির শেষ দিক থেকে উহানে লকডাউন শুরু হয়। এপ্রিলে পরিস্থিতির উন্নতি হলে কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হয়। চীনে করোনাভাইরাসজনিত চার হাজার ছয় শর বেশি প্রাণহানি ঘটেছে, যার ৮০ শতাংশ ঘটনাই উহানের।
ইউরোপেও খুলছে স্কুল : করোনাভাইরাসের নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিলেও ইউরোপের স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। গতকাল থেকে ফ্রান্সের শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরেছে। অবশ্য এই নিয়ে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। শিক্ষক এবং ১১ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের স্কুলের ক্লাসে ও বাইরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
বৈশ্বিক পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বৈশ্বিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ৫৮ লাখ ছাড়িয়েছে। এই সময়ে সেরে উঠেছে এক কোটি ৮১ লাখেরও বেশি রোগী। আর প্রাণ হারিয়েছে আট লাখ ৫৮ হাজারেরও বেশি মানুষ। সূত্র : এএফপি।