বাংলাদেশে তরুণ মেধাবীদের বিকাশে হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেড ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার ২০২০’ প্রোগ্রাম উদ্বোধন করেছে। আজ ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
অনুষ্ঠানটি সূচনা করেন হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ঝাং ঝেংজুন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এস. এম. মোস্তফা আল মামুন, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আশিকুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রধান ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. বশির আহমেদ, বিগত বছরের এই প্রোগ্রামের দুই বিজয়ী এবং হুয়াওয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
স্থানীয়ভাবে আইসিটি খাতে তরুণ মেধাবীদের বিকাশ এবং তাদের মাঝে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষার প্রসারের লক্ষ্যে বছরের সবচেয়ে বড় সিএসআর প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’ আয়োজন করে হুয়াওয়ে। এ উদ্যোগে অ্যাকাডেমিক ও খাত সংশ্লিষ্ট জ্ঞানের অসাম্য দূরীকরণের ওপর জোর দেয়া হয়; নির্দিষ্ট অংশগ্রহণকারীরা বৈশ্বিক আইসিটি খাতের সর্বশেষ উন্নয়ন নিয়ে জানার সুযোগ পায়, পাশাপাশি তাদের আইসিটি দক্ষতা বৃদ্ধিরও সুযোগ পায়। বিশ্বব্যাপী এসটিইএম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশলবিদ্যা ও গণিত) এবং আইসিটি বিষয়ে শীর্ষ শিক্ষার্থীদের জন্য হুয়াওয়ের দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রমের আওতায় এ কার্যক্রমটি পরিচালিত হয়।
এবছর বাংলাদেশে এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বুয়েট, চুয়েট, কুয়েট এবং রুয়েট থেকে ছাত্রছাত্রীগণ অংশগ্রহণ করবেন । প্রতিযোগিতায় ঢাবি, চুয়েট ও কুয়েটের ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীগণ এবং অন্যদিকে, বুয়েট ও রুয়েটের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীগণ অংশ নিবে।
প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখিত বিভাগগুলো থেকে চূড়ান্ত বর্ষের দু’জন সেরা শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হবে। সিজিপিএ, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা এবং নতুন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী প্রতিষ্ঠানের ওপর শিক্ষাথীদের দেয়া প্রেজেন্টেশনের ওপর ভিত্তি করে তাদেরকে নির্বাচিত করা হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থীগণ চীনের বেইজিং ও শেনঝেনে অবস্থিত হুয়াওয়ের প্রধান কার্যালয় থেকে পাঁচ দিনব্যাপী অনলাইন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে।
অনুষ্ঠানে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘তরুণরাই যেকোন উন্নয়নের মূল চালিকাশক্তি। তাদের ইতিবাচক বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হুয়াওয়ের সিডস ফর দ্য ফিউচার প্রোগ্রামটি তরুণদের আইসিটি দক্ষতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত বিকাশে সহায়তা করে। আমাদের প্রত্যাশা, এ প্রোগ্রামটি আইসিটি খাতে শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার গড়তে উজ্জীবিত করবে এবং বিগ ডেটা, আইওটি এর মতো নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান লাভে সহায়তা করবে । যার ফলে, ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। আর আমাদের দেশের ছেলেমেয়েদের সেই পরিবেশটা তৈরি করে দিচ্ছে বলে আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। এ উদ্যোগগুলো তরুণদের উদ্ভাবনী চিন্তার বিকাশে সহায়ক হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশীদার হিসেবে হুয়াওয়ের ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।’
ঝাং ঝেংজুন বলেন, ‘একটি দেশের নতুন প্রজন্ম কতটুকু জ্ঞান অর্জন করছে এবং দক্ষ হয়ে বেড়ে উঠছে এটি সে দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এ নতুন প্রজন্মই আগামী দিনে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। বাংলাদেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে এ দেশের তরুণদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে হুয়াওয়ে। গত পাঁচ বছর ধরে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চীনে অবস্থিত হুয়াওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্রগুলোতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় শিক্ষার্থীরা বিশ্বের নতুন প্রযুক্তি যেমন ফাইভজি, ক্লাউড এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞানার্জনের সুযোগ পাচ্ছে। আমরা চাই আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা যেন নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে পারে এবং উদ্ভাবনী উপায়ে স্থানীয় চাহিদা পূরণে প্রয়োজনীয় সমাধান দিতে পারে।’
অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ হুয়াওয়েকে এ ধরনের কর্মসূচি আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান । তাঁরা মতামত ব্যক্ত করেন, এ ধরনের কার্যক্রম তরুণদের বিকাশে সহায়তা করবে এবং পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিতে সহায়তা করবে। এ ধরনের উদ্যোগ ডিজিটাল রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে তরুণদের অ্যাকাডেমিক ও প্রায়োগিক জ্ঞানের অসাম্য দূর করে প্রযুক্তিনির্ভর শক্তিশালী জাতি গঠনে সহায়তা করবে।’