গত ১৪ জুলাই শেষ হলো দ্বাদশ বিশ্বকাপ ক্রিকেট। বিশ্বকাপ শেষে এখন চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এই তালিকায় আছেন সাবেক খেলোয়াড়রা।
বিভিন্ন বিশ্লেষনে ব্যস্ত সময়ই কাটাচ্ছেন তারা। এরমধ্যে নিজেদের মত করে বিশ্বকাপের সেরা একাদশ বেছে নিয়েছেন অনেকে। ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বকাপের সেরা একাদশ বাছাই করেছেন। সেখানে আছেন বাংলাদেশের ও এবারের বিশ্বকাপের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। টেন্ডুলকারের পছন্দের একাদশে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
টেন্ডুলকারের পছন্দের একাদশে ওপেনার হিসেবে আছেন ভারতের রোহিত শর্মা ও ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো। ৯ ইনিংসে ৫টি সেঞ্চুরি ও ১টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬৪৮ রান করেন রোহিত। ব্যাটিং গড়-৮১। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে রোহিতই সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
উদ্বোধনী জুটিতে রোহিতের সঙ্গী বেয়ারস্টো। বিশ্বকাপের ম্যাচে ১১ ইনিংসে ২টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৩২ রান করেছেন তিনি। বিশ্বকাপের সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের তালিকায় ষষ্ঠস্থানে আছেন বেয়ারস্টো।
টেন্ডুলকারের পছন্দের সেরা একাদশের তিন নম্বরে ব্যাটিং-এ আছেন কেন উইলিয়ামসন। এই দলের নেতৃত্বেও আছেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ৯ ইনিংসে ২টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৭৮ রান করেছেন এবারের বিশ্বকাপের ‘জেন্টলম্যান’ খেতাব পাওয়া উইলিয়ামসন। বলতে গেলে ব্যাটসম্যান হিসেবে দলকে একাই টেনেছেন তিনি। তাই তার ব্যাটিং পারফরমেন্স ও বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বের কারনে দ্বাদশ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন উইলিয়ামসন।
চার নম্বরে আছেন ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। বিশ্ব ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে ৬৬টি সেঞ্চুরির মালিক কোহলি, দ্বাদশ বিশ্বকাপে কোন সেঞ্চুরিই পাননি। তবে ৫টি হাফ-সেঞ্চুরি ছিলো তার। ৯ ইনিংসে ৪৪৩ রান করছেন এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান।
টেন্ডুলকারের পছন্দের সেরা একাদশে অলরাউন্ডার হিসেবে আছেন চারজন। এরা হলেন- সাকিব, ইংল্যান্ডের বেন স্টোকস, ভারতের হার্ডিক পান্ডিয়া-রবীন্দ্র জাদেজা। এরমধ্যে নি:সন্দেহে এবারের বিশ্বকাপের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব। ব্যাট হাতে ৮ ইনিংসে ৮৬ দশমিক ৫৭ গড়ে ২টি সেঞ্চুরি ও ৫টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৬০৬ রান করেন সাকিব। সর্বোচ্চ রানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। বল হাতে আলো ছড়িয়েছেন সাকিব। ৩৯৯ রানে ১১ উইকেট শিকার করেছে এই বাঁ-হাতি।
বিশ্বকাপের ফাইনাল জয়ের নায়ক স্টোকস বল হাতে খুব বেশি ভালো করতে পারেননি। তবে ব্যাট হাতে নিজের সেরাটাই দিয়েছেন তিনি। বল হাতে মাত্র ৭ উইকেট নেন তিনি। আর ব্যাট হাতে ১০ ইনিংসে ৫টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৪৬৫ রান করেন স্টোকস। ফাইনালে তার অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ে প্রধান ভূমিকা রাখে।
অলরাউন্ডার হিসেবে ৯ ইনিংসে বল হাতে ১০ উইকেট ও ২২৬ রান করেন পান্ডিয়া। বিশ্বকাপের শেষ দিকে এসে দু’টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ভারতের জাদেজা। বল হাতে ২ উইকেট নেন তিনি। তবে ব্যাট হাতে দেখিয়েছেন বড় চমক। সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ২৪০ রানের টার্গেটে ৯২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারের পথ দেখে ফেলে ভারত। এমন সময় আট নম্বরে ব্যাট হাতে নেমে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫৯ বলে ৭৭ রান করে ভারতের জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছিলেন জাদেজা। কিন্তু তার আউটের পর ভারত জয়ের বন্দরে পৌছাতে পারেনি। ১৮ রানে ম্যাচ হারে। তারপরও জাদেজার ৭৭ রানের জন্য তাকে সেরা একাদশে রেখেছেন টেন্ডুলকার।
এই একাদশে তিন পেসার অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্ক- ভারতের জসপ্রিত বুমরাহ ও ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চার। বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী স্টার্ক। ১০ ইনিংসে ২৭ উইকেট নিয়েছেন তিনি। বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে বিশ্বরেকর্ডও গড়েন স্টার্ক। ১১ ইনিংসে ২০ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান আর্চারের। ৯ ইনিংসে ১৮ উইকেট নিয়েও ভারতকে শিরোপা এনে দিতে পারেননি বুমরাহ।
বিশ্বকাপে শচীন টেন্ডুলকারের সেরা একাদশ : রোহিত শর্মা (ভারত), জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড), কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক) (নিউজিল্যান্ড), বিরাট কোহলি (ভারত), সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ), বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড), হার্ডিক পান্ডিয়া (ভারত), রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত), মিচেল স্টার্ক (ভারত), জসপ্রিত বুমরাহ (ভারত), জোফরা আর্চার (ইংল্যান্ড)।