সকল কল্পনা-জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের ঐতিহাসিক ব্যাটটির নিলাম শেষ হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি। তার নিজের নামে গড়া শহীদ আফ্রিদি ফাউন্ডেশন ২০ হাজার ডলারে (বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৭ লাখ টাকা) মুশফিকের ব্যাট কিনে নেয়।
কনোরাভাইরাসে অসহায়-দুস্থদের আর্থিক সহায়তায় নিজের ব্যাট নিলামে তুলেন মুশফিক। যে ব্যাট দিয়ে ২০১৩ সালের মার্চে গল-এ দেশের পক্ষে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি করেন করেছিলেন তিনি।
গত ৯ মে ছিলো মুশফিকের জন্মদিন। সেদিনই ব্যাটটি নিলামে তুলেন মুশফিক। পাঁচদিন ব্যাপি এই নিলামের আয়োজন করে পিকাবু। সাথে ছিলো মুশফিকের ম্যানেজমেন্ট পার্টনার নিবকো এবং স্পোর্টস ফর লাইফ। বৃহস্পতিবার রাতে নিলাম শেষ হয়। গতকাল রাতে ব্যাটটি বিক্রির কথা জানান মুশফিক নিজেই।
মুশফিক বলেন, ‘আমার ব্যাটটি কেনার জন্য এ এই পরিস্থিতিতে অবদান রাখার জন্য শহিদ আফ্রিদিকে ধন্যবাদ। আফ্রিদি তার ফাউন্ডেশনের নামে ব্যাট কিনে নিয়েছেন ২০ হাজার ডলারে (প্রায় ১৭ লাখ টাকায়)।
ব্যাট কেনার পর মুশফিককে ধন্যবাদ জানিয়ে ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছেন আফ্রিদি। আফ্রিদি বলেন, ‘আসসালামু-আলাইকুম মুশফিক, আপনি দেশের মানুষের জন্য যা করছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সত্যিকারের নায়করাই এমন কাজ করতে পারে।
আমরা সবাই মিলে খারাপ একটা সময় পার করছি। এ সময় আমাদের একে অন্যকে সাহায্য করা জরুরী, যাতে করে এই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আসতে পারি। অতীতে বাংলাদেশে আমি যে পরিমাণ ভালবাসা ও সম্মান পেয়েছি তা আমি সারা জীবন মনে রাখবো। পাকিস্তানের জনগণ ও শহীদ আফ্রিদি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে, আমি আপনার ব্যাটটা কিনে এই পথচলায় আমি আপনার সঙ্গী হতে চাই। আপনার জন্য আমার প্রাার্থনা সব সময় থাকবে, আশা করছি আল্লাহ আমাদের সাহায্য করবেন এই মহামারী পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে। আপনার সাথে আবারো মাঠে আমার দেখা হবে খুব শিগগিরই। ধন্যবাদ।’
১৩ বছর আগে শ্রীলংকার বিপক্ষে ২১টি চার ও একটি ছক্কায় ৩২১ বলে ২০০ রান করেছিলেন মুশফিক। নিলামে মুশফিকের এসএস ব্যাটটির ভিত্তিমূল্য ছিলো ৬ লাখ। নিলামে কিছু মানুষ ফলস কল দিয়ে সমস্যা তৈরি করেছিলেন। এতে তার ব্যাটের মূল্য উঠেছিলো ৪১ লাখ টাকার বেশি। ফলে কিছুক্ষনের জন্য নিলামটি বন্ধও ছিলো। পরে অবশ্য দ্রুত সমস্যা সমাধান করে পুনরায় নিলাম শুরু করে পিকাবু।
ফলস কল কারিদের উদ্দেশ্যে ক্ষোভ ঝেড়েছেন মুশফিক, ‘ফলস কল না হলে হয়তো নিলামটি আরও সাজানো-গোছানো হতে পারতো। ওভারঅল সবাইকে ধন্যবাদ। তবে যারা ফলস কল করেছেন তাদের বলতে চাই, এমন একটি মানবিক উদ্যোগে আপনারা যে অমানবিক কাজ করেছেন, তা কি একবারও ভেবে দেখেছেন আপনারা? আপনারাও যে খারাপ অবস্থায় পড়বেন না, কেউ তা বলতে পারবে না।
কেউ এসব কাজ করার আগে চিন্তা করে দেখবেন। আর যারা সৎ থেকে বিড করেছেন তাদের ধন্যবাদ। শহিদ আফ্রিদি ভাইকেও অনেক ধন্যবাদ।’
পিকাবুর প্রধান নির্বাহি অফিসার মরিন তালুকদার বলেন, কিছু প্রাথমিক সমস্যার পর সঠিক ক্রেতা হিসেবে শহিদ আফ্রিদি ফাউন্ডেশনকে পাওয়া যায়। তারা অফিসিয়াল চিঠির মাধ্যমে তাদের আগ্রহের কথা নিশ্চিত করে।
পিকাবুর মাধ্যমেই মোসাদ্দেক হোসেন-নাইম শেখের ব্যাট, মাশরাফি বিন মর্তুজার স্বাক্ষরিত ক্যাপ, যুব বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক আকবর আলীর ফাইনাল ম্যাচের জার্সি ও গ্লাভস নিলামে তোলা হয়।
আকবরের জার্সি ও গ্লাভস ২ হাজার ডলারে (বাংলাদেশি টাকায় ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা) বিক্রি হয়।
এর আগে বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানও নিজের প্রিয় ব্যাট নিলামে তুলে তা ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। -বাসস