চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়তে পারে বলে প্রাক্কলণ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে আর্থিক অবস্থা সংকুচিত হলেও ধীরে ধীরে বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার হচ্ছে বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। মঙ্গলবার ম্যানিলা থেকে প্রকাশিত এডিবির ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুকের সেপ্টেম্বর আপডেটে এই পূর্বাভাস এসেছে।
তবে এই পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে মহামারীকেই সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বলে মনে করছে এডিবি। অর্থাৎ, বাংলাদেশে কিংবা বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের গন্তব্য দেশগুলোতে মহামারীর সঙ্কট দীর্ঘায়িত হলে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নাও হতে পারে।
এডিবি বলছে, উৎপাদনের গতি বাড়ায় এবং বাংলাদেশি পণ্যের ক্রেতা দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি বাড়তে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মূল্যস্ফীতিকে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে এবং চলতি হিসাবের (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট) ঘাটতিকে জিডিপির ১ দশমিক ১ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখতে পারবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
তবে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই ধারা টেকসই করতে সামষ্টিক অর্থনীতির বিচক্ষণ ব্যবস্থাপনা এবং সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা কর্মসূচির বাস্তবায়নে জোর দেয়ার পরামর্শ এসেছে প্রতিবেদনে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন পারকাশ এক বিবৃতিতে বলেন, মহামারীর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। মহামারীর ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্য খাতে বিপুল চাপের পরও সরকার যথাযথ প্রণোদনা ঘোষণা এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতা বাড়িয়ে, দারিদ্র ও ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা নিয়ে অর্থনীতিকে ভালোই সামাল দিয়েছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য ও মহামারী ব্যবস্থাপনা করার জন্য চাপ থাকলেও প্রণোদনা প্যাকেজ ও সামাজিক সুরক্ষার মাধ্যমে সরকার অর্থনীতি ভালো ব্যবস্থাপনা করতে সক্ষম হয়েছে। রফতানির বর্তমান ভালো অবস্থা ও বিদেশ থেকে অর্থায়ন সংগ্রহ করার পাশাপাশি সরকারের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার চলমান থাকবে।
পারকাশ আরও বলেন, দ্রুত করোনার টিকা সংগ্রহ করা ও মহামারী ব্যবস্থাপনায় জোর দেয়া হলে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার টেকসই হবে। মহামারীর এই সমস্যা একটি সুযোগও বটে এবং এর ফলে সম্পদের ব্যবহার, রফতানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সামাজিক সুরক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কার বেগবান করা যেতে পারে।