বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বাংলাদেশ ইকোনমিক এসোসিয়েশনের (বিইএ) সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেছেন, করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যেও বিশ্ব অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে চীন।
জামাল উদ্দিন বলেছেন, চীনের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন বিশ্বকে করেছে আরো প্রতিযোগিতামুলক। হুয়াওয়ের মতো চীনা মোবাইল ফোন ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, নগদ অর্থহীন আর্থিক ও ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবসায় ব্যয় হ্রাস করেছে।
বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন বিইএ সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন। এই সংগঠনে রয়েছেন কমপক্ষে ৪৫০০ সদস্য। এর মধ্যে আছেন শিক্ষাবিদ, সরকার, ব্যবসায়, নাগরিক সমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেণির সদস্য। একই সঙ্গে তিনি ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন নেতাও। জামাল উদ্দিন আরো বলেন, বাংলাদেশে মোবাইলে আর্থিক সেবাখাত বিকাশে বিনিয়োগ করেছে চীনের ই-কমার্স জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান আলিবাবা। এর ফলে কোটি কোটি মানুষের কাছে বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর সময়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অর্থ স্থানান্তরে সহায়ক হয়েছে। কারণ, এ সময়ে সরকার নিরাপত্তামুলক পদক্ষেপের মাধ্যমে বেতন, ভাতা পরিশোধ করেছে মোবাইল প্লাটফরমের মাধ্যমে। এতে গরিব জনসাধারণ ইলেকট্রনিক আর্থিক সেবা উপভোগ করেছে।
উল্লেখ্য, জামাল উদ্দিন এর আগে ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বৃটেনের কার্ডিফ বিজনেস স্কুল থেকে অর্থনীতিতে তিনি অর্জন করেছেন পিএইচডি ডিগ্রি। ছিলেন জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি জোর দিয়ে চীনা অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা সম্পর্কে কথা বলেছেন। চীনের এই মডেলকে তিনি ব্যতিক্রম বা ইউনিক এবং প্রতিযোগিতামুলক বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিকালে এর বিরুদ্ধে চীনের যে নিয়মশৃংখলা বা ডিসিপ্লিন সেটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তার মতে, কোভিড-১৯ মহামারির ক্ষতি কাটিয়ে উঠার মতো পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে চীনের। যেমন তাদের আছে প্রযুুক্তি। আছে দক্ষতাসম্পন্ন স্বাস্থ্যখাতের পেশাদার। আছে সুস্থ অবকাঠামো এবং ব্যবস্থাপনা সক্ষমতা। এসব প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ব্যবহার করে চীন এই লড়াইয়ে জিততে পারবে এবং আর্থিক খাতকে ম্যানেজ করতে পারবে। তিনি বলেন, অর্থনীতিকে মসৃণভাবে পরিচালনায় চমৎকার সক্ষমতা দেখিয়েছে চীন। তারা স্বাভাবিক গতিতে আভ্যন্তরীণ জাতীয় প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে, আর্থিক খাত, ব্যাংকিং সিস্টেম ও পুঁজিবাজারকে পরিবর্তন করেছে। নিজেদেরকে বৈশ্বিক শিল্পোৎপাদনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তারা উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে। চীনের রপ্তানিমুখি এবং আভ্যন্তরীণভাবে বিশাল শিল্প বাজার বিস্তৃতির ফলে বাংলাদেশ সহ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বাজার সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে চীনে রপ্তানির ক্ষেত্রে শতকরা ৯৭ ভাগ রপ্তানিতে শূন্য শুল্ক সুবিধা ভোগ করছে বাংলাদেশ।