অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন,বাংলাদেশে বিনিয়োগ উপযোগি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। তাই আশা করি আগামীতে আমরা প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ পাব। তবে এর জন্য বিনিয়োগকারিদের প্রতি আন্তরিকতা ও ভালবাসা দেখাতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ৪র্থ বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে অনলাইনে বিনিয়োগকারিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বাংলাদেশ ইউম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও জাতীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদ, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী,বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম সালাউদ্দিন ইসলাম,বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, বাংলাদেশে আইএফসির ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রধান নুজাত আনোয়ার, রফতানিমূখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক,স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের ইজাজ, গ্রামীণ ফোনের সিইও ইয়াসির আজমান,ইউনিলিভারের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেদার লেলে প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাপী মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার হলো ৮৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের, যার বড় অংশ হলো বৈদেশিক বিনিয়োগ। কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিষয় বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ খুব কম। তিনি বলেন, আমরা ভৌত অবকাঠামো স্থাপন করেছি। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য এখন কাজ হলো ভালবাসা ও আন্তরিকতা দিয়ে বিনিয়োগকারিদের দেশে নিয়ে আসা।
তিনি জানান, বাংলাদেশ দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকে সমান চোখে দেখে। এখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মধ্যে কোন বৈষম্য করা হয় না।
বিডার বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব নানা কর্মসূচির প্রশংসা করে মুস্তফা কামাল বলেন, পুরনো বিডা এখন আর নেই। গত চার বছরে অনেক উদ্যোগ এগিয়ে চলেছে। বিনিয়োগকারিদের সাথে সংস্থার সম্পৃক্ততা অনেক বেড়েছে। তিনি বলেন,সময়োপযোগি ভাল কাজ করছে বিডা।
ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্টের সুবিধার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন,আমাদের জনশক্তি বড় সম্পদ। সেটাকে কাজে লাগাতে হবে। তাদেরকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে তারাই হবে অর্থনীতির মূল শক্তি।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সভাপতি ড. রুবানা হক রফতানি বহুমূখীকরণে সেক্টর ডাইভারসিফেকেশন কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেক্টর ডাইভারসিফেকেশনের জন্য আলাদা সংস্থা গঠন না করে বরং বিডার অধীনে এ ধরনের কার্যক্রম চলতে পারে। বিডা সেক্টর ডাইভারসিফেকেশনের কাজ করতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, সহজে ব্যবসা করার সূচকে উন্নতি করার পাশাপাশি বিডা বড় যে কাজটি করছে, তা হলো এক দরজায় সব সেবা (ওএসএস) নিয়ে আসা। এটা যদি আমরা সফলভাবে করতে পারি, তাহলে বিনিয়োগ উপযোগি অনুকূল পরিবেশ পুরোপুরি তৈরি হয়ে যাবে।
তিনি বলেন,সারাদেশে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হচ্ছে, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর অত্যন্ত চমৎকার হচ্ছে। কিন্তু আমাদের মূল সমস্যা হলো গভীর সমুদ্র বন্দর না থাকা। মাদারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে,এর বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে আমরা ব্যবসাবান্ধব পরিবেশে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করব বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বিনিয়োগ পরিবেশের উন্নয়নে বিডার সংস্কার কর্মসূচির প্রশংসা করেন। একইসাথে তিনি কোভিড-১৯ অতিমারি মোকাবেলায় প্রণোদনা প্যাকেজসহ সরকারের অন্যান্য কর্মসূচি সময়োপযোগি ছিল বলে মন্তব্য করেন।
সুত্রঃ বাসস।