গ্রামের সব শ্রেণি-পেশার পুরুষ এক টুকরা পাউরুটি বা বিস্কুটের লোভ দেখিয়ে শেফালির সঙ্গে সম্পর্ক করে। বাদ যায় না গ্রামের চেয়ারম্যানও। শেফালির এসব নিয়ে ভাবনা নেই। সে কলা–রুটি পেয়েই খুশি। এভাবে একদিন অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে শেফালি। মুখোশ খুলে পড়ার চিন্তায় পড়ে যায় শেফালির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করা গ্রামের পুরুষেরা।
শেফালির সন্তান জন্ম নেয়। আর শেফালিকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে ধর্ষণ করা প্রতিটি পুরুষই সেই শিশুর সঙ্গে নিজের চেহারার মিল পায়। তাই তারা প্রত্যেকেই শিশুটিকে হত্যা করতে উদ্গ্রীব হয়ে ওঠে। কিন্তু তত দিনে মা হয়ে বদলে গেছে শেফালি। তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য তার সন্তানকে রক্ষা করা। এরপর কী হয়, জানতে হলে দেখতে হবে ‘একটি শিশু এবং অগণিত পিতা’ নামের নাটকটি।
এই নাটকের মধ্য দিয়ে লকডাউনের বিরতি শেষে দীর্ঘদিন পর অভিনয়ে ফিরেছেন ফারজানা ছবি। ক্যামেরার সামনে শেফালি হয়েছেন ব্যক্তিগত জীবনে দুই শিশুপুত্রের এই মা। নাটকটি নিয়ে প্রায় ছয় মাস পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো ফারজানা ছবি বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত চরিত্রের আড়ালে বদলে অন্য মানুষ হয়েছি। তবে শেফালি চরিত্রটি আমার অভিনয়জীবনের এক দুর্দান্ত সংযোজন। অভিনয়ের সময় তো মনে থাকে না যে এটা করোনাকাল, এটা ধরা যাবে না, ওটা ছোঁয়া যাবে না। অথচ আমার চরিত্রটা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর। এমন একটা চরিত্র যা যা করে, তা-ই করেছি আমি।’
গ্রামের চেয়ারম্যান তোরাপ আলীর চরিত্রে অভিনয় করা ফজলুর রহমান বাবু বললেন, গল্পটা বেশ জীবনঘনিষ্ঠ। এই সময়ে নাটকটির কাহিনিবিন্যাস এবং প্রতিটি চরিত্রের বিশ্লেষণ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।
নাটকটি পরিচালনা করেছেন আলমগীর সাগর ও আতিকুর রহমান। সিনেমা বানানোর স্বপ্নে বিভোর এই পরিচালকদ্বয় বললেন, ‘এখনকার অস্থির বাস্তবতায় নাটক মানে দাঁড়িয়েছে সেই চর্বিত চর্বণ, তথাকথিত প্রেম আর জোর করে হাসানো হাস্যরসাত্মক গল্প। এমন সময়ে একটি ভিন্নধারার বাস্তবধর্মী গল্প নিয়ে কাজ করাটা ঝুঁকিপূর্ণ আর চ্যালেঞ্জিংও বটে। তবে আমরা সেই চ্যালেঞ্জই নিতে চেয়েছি। একটি ভালো কাজের জন্য সবার আন্তরিকতা আর সহযোগিতা আমাদের স্পর্শ করেছে। এই দুর্যোগকালে অনেক মানুষের সঙ্গে মিলে কাজটা করা। বিশেষ করে, গ্রামের মানুষের সহযোগিতা ছাড়া কাজটা সম্ভব করা হতো না। আশা করছি, দর্শকদের ভালো একটা কাজ উপহার দিতে পারব।’
শিগগির দর্শকেরা নাটকটি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দেখতে পারবেন।
সুত্রঃপ্রথম আলো।